বিজ্ঞাপন স্থান

ই-রিটার্ন রেজিস্ট্রেশন ও ই-রিটার্ন জমা দেওয়ার নিয়ম | E Return Registration Online

আমাদের দেশের অধিকাংশ লোকেরই ধারাণা যে, আয়কর জমা দেওয়া খুবই কঠিন একটা ব্যাপার, এজন্য আইনজীবির কাছে যেতে হবে। ডিজিটাইজেশনের এই যুগে আপনি কিন্তু আপনার ঘরে বসে হাতে থাকা স্মার্টফোন দিয়ে আপনি কিন্তু খুব সহজে আইকর জমা দিয়ে দিতে পারেন । প্রসেস খুবই ইজি চলুন আপনাদেরকে একটু দেখাই তাহলে আপনার নিজেরাই বুঝতে পারবেন।



ই-রিটার্ন জমা দেওয়ার আগে আপনাদেরকে একটি কাজ করতে হবে সেটা হচ্ছে, ই-রিটার্ন এর জন্য যে একাউন্ট খুলবেন সেটা খোলার আগে আপনাকে দেখতে হবে যে আপনি যে নাম্বারটা দিয়ে ই-রিটার্ন খুলতেছেন সেটা কি বায়োমেটিক করা কিনা এবং এই নাম্বারটি দিয়ে এই রিটার্ন খোলার আছে কিনা। এরপর আপনাকে দেখতে হবে আপনার এনআইডি টা ভেরিফাইড কিনা । এটি চেক করার জন্য আপনাকে আপনার মোবাইলে ফোনের ডায়াল পেড থেকে টাইপ করতে হবে *১৬০০১# লিখে আপনি এন্টারপ্রেস করবেন, এবারে আপনার সামনে যে ইন্টারফেসটি আসবে সেখানে আপনার এনআইডি কার্ডের শেষ ৪ ডিজিটের সংখ্যা দিয়ে সেন্ট করুন,সেন্ট করার পর আপনার নাম্বারে একটি মেসেজ আসবে সেই মেসেজে আপনার এনআইডি করা যত নামবার রেজিষ্ট্রেন করেছেন সবগুলো দেখাবে , সেখানে আপনি যে নাম্বার দিয়ে ই-রিটার্ন খুলতে চাচ্ছেন সেটি রেজিষ্টার করা কিনা, করা থাকলে আপনি ই-রিটার্ন খুলতে পারেন ।

ই-রিটার্ন রেজিস্ট্রেশন কিভাবে করবো?
ই-রিটার্ন রেজিস্ট্রেশন করার জন্য প্রথমে আমাদেরকে https://etaxnbr.gov.bd/ সাইটে যেতে হবে সাইটে প্রবেশ করার পর অনেকগুলো অপশন প্রদর্শিত হবে, সেখান থেকে আপনি ই-রিটার্ন অপশনে যাবেন, সাইটে রেজিস্ট্রেশন করা না থাকলে রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে।লগইন করার পর আপনার সামনে একটি উইন্ডো প্রদর্শিত হবে নিচের ছবিটির মত।




প্রথম খালি ঘরে আপনি আপনার TIN নাম্বারটি দিবেন , দ্বিতীয় খালি ঘরে আপনার রেজিস্টার্ড করা মোবাইল নাম্বারটি দিবেন এবং তিন নাম্বার ঘরে সঠিক ক্যাপচার পূরণ করে ভেরিফাই অপশনে ক্লিক করবেন। 
ভেরিফাই অপশনে ক্লিক করার পর আপনার ফোনে ছয় সংখ্যার একটি OTP (one time password) কোড যাবে.কোডটি সঠিক ভাবে ওটিপি বক্সে দিন (নিচের ছবিতে দেখানো হয়েছে) এরপর একটি নতুন পাসওয়ার্ড দিয়ে সাবমিট করুন । পাসওয়ার্ড দেওয়ার সময় অবশ্যই স্ট্রং পাসওয়ার্ড দেওয়ার চেষ্টা করবেন।


সঠিকভাবে পাসওয়ার্ড সেট করার পর আপনার রেজিস্ট্রেশনটি সম্পন্ন হবে। এরপর সাইন ইন বাটনে ক্লিক করে Taxpayer Identification Number (TIN) নাম্বার ,পাসওয়ার্ড এবং ক্যাপচার সঠিকভাবে পূরণ করে sign in করুন । সাইনিং করার পর আপনি আপনার ব্যক্তিগত সমস্ত তথ্য দেখতে পাবেন যা ইতিমধ্যে আপনি টিম সার্টিফিকেট করার সময় দিয়েছিলেন।যদি কোন তথ্য আপনার ভুল হয়ে থাকে তাহলে আপনি এখান থেকে এডিট পাটনে ক্লিক করে সংশোধন করতে পারবেন । এডিট করা হয়ে গেলে সেভ এন্ড কন্টিনিউতে (save and continue)   ক্লিক করবেন।

ক্লিক করার পর নিচের ছবিটি দেখানো উইন্ডোর মতো একটি পেজ আসবে-



এখানে আপনাকে বেশ কিছু ইনফরমেশন দিয়ে ফুল-ফিলাপ করতে হবে,তার মধ্যে প্রথম তিনটি ঘর

যেমন Return scheme, assessment year এবং  Income year আপনাকে পূরণ করতে হবে না এটা অটোমেটিকলি আপনার দেওয়া ব্যক্তিগত তথ্য থেকে নিয়ে নেবে।বাকি যে ইনফরমেশন গুলো রয়েছে সেগুলো দেখে জেনে বুঝে টিক চিহ্ন দিতে হবে অবশ্যই আপনি আপনার ব্যক্তিগত পেশার উপর নির্ভর করে এগুলো সিলেক্ট করবেন। সবগুলো ইনফরমেশন দেওয়ার পর সেভ এন্ড কন্টিনিউতে ( Save & continue) ক্লিক করুন।

এরপর নতুন একটি উইন্ডো আসবে নিচের ছবির মত-


এখানে আপনাকে এডিশনাল ইনফরমেশন ( Additional Information) এবং IT10B রিকোয়ারমেন্টস (IT10B Requirements) আপনার ব্যক্তিগত তথ্য অনুযায়ী সিলেট করতে হবে। সবগুলো ইনফরমেশন দেওয়ার পর সেভ এন্ড কন্টিনিউতে ( Save & continue) ক্লিক করুন। এরপর নতুন আরো একটি উইন্ডো আসবে নিচের ছবির মত-

এখানে লাল বক্স সিলেক্ট করা অপশনগুলো এক এক করে প্রত্যেকটি ট্যাবে গিয়ে ( Assessment, Income, Rebate, Expenditure, Assets & Liabilities, Tax & Payment , Return View) আপনাকে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে পূরণ করতে হবে । এরপর Tax & Payment ট্যাবে গিয়ে আপনাকে পেমেন্ট করতে হবে ,এখানে সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে আপনি আপনার স্মার্টফোন দিয়ে পেমেন্ট করতে পারবেন, আপনাকে আর ব্যাংকে গিয়ে দাঁড়াতে হবে না। এই পেমেন্ট আপনি আপনার মোবাইল ওয়ালেট যেমন বিকাশ ,নগদ, রকেট দিয়ে করতে পারবেন এছাড়াও ব্যাংক কার্ড দিয়েও আপনি পেমেন্ট করতে পারবেন । পেমন্ট সম্পন্ন হওয়ার পর সর্বশেষ ট্যাব রিটার্ন ভিউতে ( Return View)  ক্লিক করবেন সেখানে আপনি আপনার সমস্ত ডিটেইলস দেখতে পারবেন।

এখানে আপনি আপনার সমস্ত তথ্য ভালো করে দেখে নিবেন, যদি কোন তথ্য ভুল থাকে তাহলে এখান থেকেও ফাইনাল সাবমিশনের আগে সংশোধন করা যাবে। এভাবে আপনি আপনার এ রিটার্ন রেজিস্ট্রেশন এবং ইরিটার্ন জমা দিতে পারবেন এর জন্য আপনাকে আর কষ্ট করে দোকানে গিয়ে বসে থাকতে হবে না।


আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার কাজে লেগেছে । এরপরও যদি কোন মতামত থাকে আপনাদের তাহলে অবশ্যই কমেন্টস বক্সে আপনাদের মতামত জানাবেন ধন্যবাদ সবাইকে।