আসসালামু আলাইকুম প্রিয় বন্ধুরা, আজকে আমরা জানবো কিভাবে অনলাইন থেকে জন্ম সনদ ডাউনলোড করা যায় খুব সহজে। আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদটি ইউনিয়ন পরিষদের না গিয়েও আপনি ডাউনলোড করতে পারবেন আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোন দিয়ে। তো চলুন সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি আলোচনা করা যাক ।
নতুন করে জন্ম নিবন্ধন এর আবেদন করলে কিংবা পুরনো জন্ম নিবন্ধনটি হারিয়ে গেলে আমাদেরকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সেটা রিপ্রিন্ট করে নিতে হয় অনেক সময় আমাদের সময় হয়ে ওঠেনা ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে জন্মসনদ নিয়ে আসা , তবে সেক্ষেত্রে আপনি ইউনিয়ন পরিষদে না গিয়েও অনলাইন থেকে সহজেই জন্ম নিবন্ধনের সনদের ভেরিফিকেশন কপি ডাউনলোড করে ব্যবহার করতে পারবেন যেকোন কাজে। তবে যে কোন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি কাজে অবশ্যই এ ইউনিয়ন পরিষদের ভেরিফাইড কপি চেয়ারম্যান এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট রেজিস্টারের সিলসহ সিগনেচার লাগবে।
এজন্য জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন ওয়েবসাইট everify.bdris.gov.bd -তে প্রবেশ করে আপনার অনলাইন জন্ম নিবন্ধনের ১৭ ডিজিট নাম্বার ও জন্ম তারিখ দিয়ে তথ্য অনুসন্ধান করে ইউনিয়ন পরিষদ জন্ম নিবন্ধন সনদ ডাউনলোড করতে পারবেন। বিস্তারিত প্রক্রিয়াটি নিচে আলোচনা করা হলো।
তার আগে জেনে নেই জন্মসনদের কি কি কাজ ।
জন্ম সনদ আমাদের কি কি কাজে লাগে
- ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও জাতীয় পরিচয়পত্র পেতে ।
- পাসপোর্ট তৈরি করতে ।
- শিশু সন্তানকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করতে।
- সরকারী, বেসরকারী বা স্বায়ত্বশাসিত সংস্থায় নিয়োগদানে।
- ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে।
- জমি রেজিষ্ট্রেশন করার কাজে।
- বিবাহ বা নিকাহ নিবন্ধনের কাজে।
- গ্যাস, পানি, ও বিদ্যুৎ সংযোগ প্রাপ্তি।
- ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (টিআইএন) প্রাপ্তির ক্ষেত্রে।
- ব্যাংক হিসাব খোলার কাজে।
- আমদানি ও রপ্তানী লাইসেন্স আবেদন করতে।
- ঠিকাদারী লাইসেন্স করতে।
- ব্যবসা প্রতিষ্ঠানর ট্রেড লাইসেন্স করতে।
- গাড়ির রেজিষ্ট্রেশন করার কাজে
- বাড়ির নক্সা অনুমোদনে
নিজে নিজে জন্ম নিবন্ধন সনদ ডাউনলোড করতে আপনার প্রয়োজন হবে-
- একটি কম্পিউটার আর কম্পিউটার না থাকলে আপনার হাতে থাকা একটি স্মার্টফোন।
- ইন্টারনেট কানেকশন ও একটি ওয়েব ব্রাউজার।
- জন্ম সনদে উল্লেখ থাকা জন্ম নিবন্ধনের ১৭ ডিজিট নম্বর।
জন্ম নিবন্ধন সনদ ডাউনলোড করার নিয়ম
হ্যালো আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদটি যদি অনলাইন হয়ে থাকে তাহলে আপনিএটি এটি জন্ম সনদের ১৭ ডিজিটের নাম্বার দিয়ে জন্ম নিবন্ধন সনদ অনলাইন কপি ডাউনলোড করতে পারবেন । অনলাইন না হয়ে থাকলে এটি ডাউনলোড করতে পারবেন না এজন্য জন্ম সনদটি আগে অনলাইন করে নিবেন।
জন্ম নিবন্ধন সনদ ডাউনলোড করার নিয়ম
- জন্ম নিবন্ধন সনদ ডাউনলোড করার জন্য everify.bdris.gov.bd এই লিংকে প্রবেশ করুন;
- জন্ম নিবন্ধনের ১৭ ডিজিট নম্বরটি লিখুন;
- জন্ম তারিখ YYYY-MM-DD এই ফরম্যাটে লিখুন (প্রথমে বছর তারপর মাস ,এরপর দিনের তারিখ সিরিয়াল অনুযায়ী লিখুন )
- ক্যাপচার (গানিতিক সমস্যা অর্থাৎ কখনো কখনো ক্যাপচারে যোগ অথবা বিয়োগ এর ফলাফল বক্সে লিখতে হয়.) পূরন করে সার্চ বাটনে ক্লিক করুন;
- CTRL+P বাটন Press করে প্রিন্ট অপশন থেকে PDF ডাউনলোড করুন।
উপরের নির্দেশিকা ছবিতে অনুসরণ করুন
আপনার দেওয়া তথ্য সঠিক হলে পরবর্তী পেইজে উক্ত জন্ম নিবন্ধনের অনলাইনে থাকা সকল তথ্য প্রদর্শিত হবে । এটি ডাউনলোড করে আপনার মূল জন্ম নিবন্ধনের মতোই ব্যবহার করতে পারবেন। জন্ম সনদের পেইজটি ডাউনলোড করার জন্য Print অপশন থেকে Save as PDF সিলেক্ট করে Print করুন।
কম্পিউটার ও মোবাইলে ভিন্ন উপায়ে প্রিন্ট করতে হয়। কম্পিউটার থেকে পেজটি ফ্রি দেওয়ার জন্য কি-বোর্ড থেকে – Control + P চাপুন। তারপর Print Preference অর্থাৎ পেজের সাইজ ঠিক করে Print এ ক্লিক করলেই সংযুক্ত প্রিন্টারে প্রিন্ট করতে পারবেন। অথবা Print to PDF এ ক্লিক করে সেইভ করে রাখতে পারবেন।
আর ফোনের মাধ্যমে জন্ম সনদটি প্রিন্ট করার জন্য প্রথমে আপনার প্রিন্টার টিকে ওটিসি ক্যাবলের মাধ্যমে আপনার ফোনের সাথে সংযোগ করতে হবে সংযুক্ত করতে হবে তারপর থ্রি ডট বাটনে গিয়ে প্রিন্ট অপশনে গিয়ে ক্লিক করে প্রিন্ট করে নিতে পারবেন । এছাড়াও জন্য জন্ম সনদটি পিডিএফ আকারেও সেভ করতে পারবেন মোবাইল ফোনে ।
জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে না পাওয়ার কারণ ও সমাধান কি?
অনেক সময় আমরা জন্ম সনদের নাম্বার দিয়ে অনলাইনে আমাদের জন্মসনদটি খুঁজে পাইনা এর মূল কারন হচ্ছে এর ডিজিট সংখ্যা। ১৬ ডিজিটের পুরনো কিংবা হাতে লেখা জন্ম নিবন্ধন হলে তা অনলাইনে পাওয়া যায় না। অর্থাৎ পুরনো ১৬-সংখ্যার নিবন্ধন বা হাতে লেখা জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে পাওয়া যায় না।
সেজন্য প্রথমেই জন্ম নিবন্ধন টি ১৬ ডিজিট থেকে ১৭ ডিজিটে কনভার্ট করে নিতে হবে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন অফিসে গিয়ে নতুন ১৭ ডিজিটের নম্বর সংগ্রহ করুন। তারপর জন্ম নিবন্ধন তথ্য অনুসন্ধান সাইট থেকে আপনি আপনার জন্ম সনদটি দেখতে বা ডাউনলোড করতে পারবেন।
