বিজ্ঞাপন স্থান

সিয়াম বা রোজা সম্পর্কে কিছু ইসলামিক প্রশ্ন-উত্তর । পর্ব-১

আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় বন্ধুরা আজ আমরা পবিত্র রামাদান সম্পর্কে গুরুপ্তপূর্ণ কিছু প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানব যা একজন মুমিন রোজাদারদের জন্য খুবই গুরুপ্তপূর্ণ। পবিত্র রামাদান সম্পর্কে এমন অনেক বিষয় আছে যেগুলো শুনতে কিংবা বুঝতে খুব স্বাভাবিক মনে হেল ইসলামের দৃষ্টিতে বা ইসলামের বিধান অনুযায়ী সেগুলোর হুকুম আহকাম ভিন্ন । অনেক সময় আমাদের মনে অনেক প্রশ্ন জাগে রোজার বিভিন্ন মাসয়ালা সম্পর্কে, সেগুলো আমরা কোন আলেম ওলামার মাধ্যমে সেগুলো জানার জন্য আগ্রহ হলেও স্বাভাবিক বিষয়ে হিসেবে সেগুলোকে এড়িয়ে চলি। মুসলমান হিসেবে আমাদের উচিত ইসলামের সঠিক হুকুম আহকাম সম্পর্কে জানা, বিশেষ করে একজন মুমিন রোজাদারদের এসব বিষয়ে জানা জরুরী। তাহলেই আমরা সহীহ শুদ্ধভাবে রামাদানের হুকুম-আহকাম আমল করতে পারবো। তাই আজকের আর্টিকেলে পবিত্র রামাদান সম্পর্কে কিছু কমন প্রশ্ন নিয়ে সাজিয়েছে। আশা করি এই আর্টিকেলটির প্রশ্নের-উত্তর গুলো আপনাদের অজানা অনেক বিষয়ে জানতে সাহায্য করবে।


সিয়াম বা রোজা সম্পর্কে কিছু  ইসলামিক প্রশ্ন-উত্তর

প্রশ্নঃ সূর্য অস্ত যাবার আগে ইফতারীর সময়ে হয়েছে মনে করে ইফতার করে ফেললে করণীয় কী?

উত্তরঃ আমরা অনেক সময় আজান দেওয়ার পূর্বে তার করে ফেলে কেউ যদি ভুলে বাঁচানোর পূর্বে ইফতার করে বা পানাহার করে খাদ্য গ্রহণ করে তাহলে তার রোজা ভেঙ্গে যাবে। তবে কেউ যদি অনিচ্ছাকৃতভাবে ইফতারের সময় হয়েছে ভেবে খাদ্য গ্রহণ করে তার রোজা হয়ে যাবে এতে তার কোন গুনাহ হবে না। তবে ইচ্ছাকৃতভাবে সময় হয়েছে ভেবে খাদ্য গ্রহণ করলে রোজা ভেঙ্গে যাবে পরবর্তীতে উক্ত রোজাটির কাজা করতে হবে ।
এ সম্পর্কে একটি হাদিস জেনে নেওয়া যাক

عَنْ عَلِيِّ بْنِ حَنْظَلَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: شَهِدْتُ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ فِي رَمَضَانَ، وَقُرِّبَ إِلَيْهِ شَرَابٌ فَشَرِبَ بَعْضُ الْقَوْمِ وَهُمْ يَرَوْنَ أَنَّ الشَّمْسَ قَدْ غَرَبَتْ، ثُمَّ ارْتَقَى الْمُؤَذِّنُ فَقَالَ: يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ وَاللَّهِ لَلشَّمْسُ طَالِعَةٌ لَمْ تَغْرُبْ، فَقَالَ عُمَرُ: «مَنَعَنَا اللَّهُ مِنْ شَرِّكَ مَرَّتَيْنِ أَوْ ثَلَاثَةً، يَا هَؤُلَاءِ مَنْ كَانَ أَفْطَرَ فَلْيَصُمْ يَوْمًا مَكَانَ يَوْمٍ، وَمَنْ لَمْ يَكُنْ أَفْطَرَ فَلْيُتِمَّ حَتَّى تَغِيبَ الشَّمْسُ»

আলী ইবনে হানযালা তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি রোযার মাসে ওমর রা.-এর নিকট ছিলেন। তার নিকট পানীয় পেশ করা হল। উপস্থিতদের কেউ কেউ সূর্য ডুবে গেছে ভেবে তা পান করে ফেলল। এরপর মুয়াযযিন আওয়াজ দিল, হে আমীরুল মুমিনীন! সূর্য এখনো ডুবেনি। তখন ওমর রা. বললেন, ‘যারা ইফতারি করে ফেলেছে তারা একটি রোযা কাযা করবে। আর যারা ইফতারি করেনি তারা সূর্যাস্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ৬/১৫০, হাদীস নং-৯১৩৮, ৯০৪৫]

প্রশ্নঃ সেহরী খেয়ে নিয়ত না করে ঘুমিয়ে পড়লে রোযা হবে কি?

উত্তরঃ আমাদের মধ্যে অনেকে আছি, যারা মনে করি সেহরি  খেয়ে ঘুমিয়ে গেলে এবং নিয়ত না করলে রোজা হবেনা, এটা আসলে  একেবারেই  অবাস্তব। আসুন বিষয় বিস্তারিত জেনে নেই-
আগে জানতে হবে ,নিয়ত কি? নিয়ত বলতে আমরা বুঝি ইচ্ছে, সংকল্প, উদ্দেশ্য ইত্যাদি, অর্থাৎ কোন কাজের জন্য ইচ্ছা পোষণ করা. এখন ধরে নিন আপনি রমজানে ঘুম থেকে উঠে সেহরি খেলেন স্বাভাবিকভাবেই এটা বোঝা যায় যে আপনি রোজা রাখার উদ্দেশ্যেই সেহরি খেলেন।
সুতরাং ঘুম থেকে উঠে সেহরি খাওয়াটাই হচ্ছে একটা নিয়ত- এর জন্য আলাদা কোন দোয়া পড়তে হবে না আপনার নিয়ত হয়ে যাবে। 
وَالتَّسَحُّرُ فِي رَمَضَانَ نِيَّةٌ ذَكَرَهُ نَجْمُ الدِّينِ النَّسَفِيُّ، (الفتاوى الهندية، كتاب الصوم، الباب الاول فى تعريفه وتقسيمه وسببه وقته وشرطه-1/195)

প্রশ্নঃ নামায পড়তে না পারলে কী রোযা রাখা যাবে না?

উত্তরঃ নামাজ পড়তে না পারলে কি রোজা রাখা যাবে না এই প্রশ্নটি আমাদের মনে প্রায় সময় নেই প্রায় সময় আসে. যিনি রোজা রাখছেন কিন্তু নামাজ পড়ছেন না তার রোজাটা হচ্ছে শুধু পানাহাত ত্যাগ করা । রোজার শিক্ষা কিন্তু এটা নয় রোজার শিক্ষা হচ্ছে আল্লাহ তায়ালার এবাদত করা পরিপূর্ণভাবে পালন করে সকল পাপাচার অন্যায় থেকে নিজেকে মুক্ত  রাখা, নিজের নফসকে মহান আল্লাহ তায়ালার নিকট সমর্পণ করা। আর সেটা যদি না হয়ে থাকে, তাহলে আপনার এই সিয়ামের কোনো মানে নেই, আল্লাহ সিয়ামের মাধ্যমে এটাই চাচ্ছেন। সিয়াম পালন করে আল্লাহ তায়ালার অন্যান্য আইন অমান্য করে সিয়াম পালন করা এর মধ্যে কোন ফজিলত নেই। এ ব্যাপারে একটি হাদিস জেনে নেওয়া যাক

‘যে ব্যক্তি আসরের নামাজ ত্যাগ করে, তার আমল নিষ্ফল হয়ে যায়।’ [ বুখারি : ৫২০ ]
 
এ হাদিস প্রমাণ করে, বেনামাজির কোনো আমল আল্লাহ কবুল করেন না এবং বেনামাজি তার আমল দ্বারা কোনোভাবে উপকৃত হবে না। তার কোনো আমল আল্লাহর কাছে উত্তোলন করা হবে না।